পবিত্র শবে বরাত ২০২১ আমল ও ফজিলত। নামাজ কত রাকাত। রোযা কয়টি ? - Islamer Rasta in Muslim

পবিত্র শবে বরাত ২০২১ আমল ও ফজিলত। নামাজ কত রাকাত। রোযা কয়টি ?



আসসামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ, আজকে পবিত্র শবে বরাত নিয়ে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। যা আমাদের সমাজে প্রচলিত। তাই ভিডিও টি না টেনে মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ন দেখার অনুরোধ করছি।প্রিয় দর্শক প্রশ্নগুলো হলো, ১। পবিত্র শবে বরাতের নামায কত রাকাত ও কিভাবে পড়বো এবং কিভাবে রসুল (স) পবিত্র শবে রবাতের নামায পড়তে বলেছেন। ২। পবিত্র শবে বরাতের রোযা কয়টি ও কিভাবে রাখতে হয় এবং রোযা রাখা যাবে কিনা। ৩। পবিত্র শবেবরাতের আমল ও ফজিলত এবং আমাদের করনীয় কি? প্রিয় দর্শক চলুন কুরআন ও হাদিসের আলোকে এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর জেনে নেওয়া যাক। 

প্রিয় দর্শক পবিত্র শবে বরাতের রাতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা অগনিত মাখলুক কে ক্ষমা করে থাকেন। হাদিসে বর্নিত আছে, হযরত আয়েশা (রা) বলেন, রসুল (স) বলেছেন এই রাতে ভেড়া বকরির পশমের সংখ্যার পরিমানের চেয়েও বেশি সংখ্যা পরিমান গুনাহগারকে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি - ৭৩৯)

১ প্রশ্ন হলো পবিত্র শবে বরাতের নামায কত রাকাত ও কিভাবে পড়বো এবং কিভাবে রসুল (স) পবিত্র শবে রবাতের নামায পড়তে বলেছেন।  এর উত্তর হলো- পবিত্র শবে বরাতে নির্দিষ্ট কোন নামাজের কথা কোন হাদিস এবং কোরআনে উল্লেখ নেই। তবে হাদিসে পাওয়া যায় রসুল (স) বলেন যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে এবং দিনে রোযা পালন করবে। ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদত হল নামায। সুতরাং নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদত হল নফল নামাজ(ইবনে মাজাহ-১৩৮৪)। তাই দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি নামায পড়তে পাড়েন তার নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই এখন নিয়ত করবেন কিভাবে। আপনি বলবেন আমি কিবলা মুখী হয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ছি আল্লাহু আকবার। এভাবে নিয়ত করলে আপনার নামাজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে এখানে সুরাতুল ফাতিহার সাথে অন্য সুরা মিলিয়ে সুরাতুল ইখলাছ তিন বার এবং সুরাতুল ওয়াকিয়া পড়তে হবে এমন কোন কথা হাদিসে পাকে নেই। তারপও আমাদের সামাজে হুজুরদের মুখে এগুলো প্রচলিত এগুলো বানোয়াট কথা। রসুল(স) এ বিষয়ে সুসম্পষ্ট কোন কিছু বলেন নি। আপনি পবিত্র কুরআনের যে কোন সুরাই পড়তে পারেন। 

২ প্রশ্ন হলো পবিত্র শবে বরাতের রোযা কয়টি ও কিভাবে রাখতে হয় এবং রোযা রাখা যাবে কিনা। হাদিস শরীফে পবিত্র শবে বরাতের রোযার বিশেষ ফজিলত পাওয়া যায়। হাদিসে শরীফে এসেছে হযরত মুহাম্মদ (স) এরশাদ করেন ১৫ শাবানের রাতে তোমরা নফল ইবাদত কর এবং পরদিন রোযা রাখ। এই হাদিস দিয়ে শবে বরাতের একটি নফল রোজা এর প্রমানিত হয়। তবে বিভিন্ন হাদিসে হয়রত মোহাম্মদ(স) প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখে তিনি দিন তিনিটি নফল রোজা রাখতেন এবং তিনি নফল রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। সেই হিসাবে পবিত্র শাবান মাসেও এই তিনটি রোজা রাখা যেতে পারে। 
আবার অন্য একটি হাদিসে উল্লেখ আছে, হযরত উম্মে সালমা ও হযরত আয়েশা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, শাবান মাসে হযরত মুহাম্মদ (স) অধিকহারে রোজা রাখতেন। যেন তিনি পুরো শাবান মাসেই রোজা রাখতেন।(তিরমিজি- ১৫৫,১৫৬,১৫৯) হাদিস থেকে পাওয়া যায়। সেই হিসেবে শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখা অবশ্যই সোয়াবের কাজ।


৩ প্রশ্ন হলো পবিত্র শবে বরাতের আমল ও ফজিলত এবং আমাদের করনীয় কি? প্রিয় দর্শক এই পর্যন্ত ভিডিও টি এই পর্যন্ত দেখার পর অবশ্যই আপনারা বুজতে পারছেন।আমরা পবিত্র শবে বরাতে আমরা কি কি আমল করতে পারি।  তবুও আমি আপনাদের সামনে এই প্রশ্ন গুলো উত্তর সহজ ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি। পবিত্র শবে বরাতে রাতে  এশার নামায পড়ার পর দুইরাকাত সুন্নাত নামায পড়বেন।  তারপর নির্যনে দুই রাকাত করে নফল নামায পড়তে থাকবেন। এখানে কত রাকাত নফল নামায পড়লেন সেটা বড় বিষয় না। আপনি নামায কত টা খুশু খুজুর শহিত পড়লেন এবং মনোযোগ সহ কারে পড়লে এবং মনে করবেন এটাই আপনার জীবনের শেষ নামায মনে করে আদায় করলে  এইটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। 

হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত আয়েশা (রা) বলেন, একবার রাসুল (স) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ
 সিজদা করলেন যে আমার ধারনা হলো তিনি মৃত্যুবরন করেছেন। আমি তখন উঠে তার পায়ের বৃদ্ধাগুলে নাড়া দিলাম, তার বৃদ্ধাঅঙ্গুলি এবং তিনি সিজদা থেকে উঠে নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ্য করে বললেন: হে আয়েশা তুমি কি আশঙ্কা করে ছিলে। আমি বললাম ইয়া রাসুল(স) আপনার দীর্ঘ
 সিজদা দেখে আমার আশংকা হয়েছিল আপনি  মৃত্যুবরন করেছেন কিনা। নবী (স) বলেন তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ এবং আল্লাহর  রসুল (স) ভালো জানেন। 

তখন রাসুল (স) বললেন, এটা হল মধ্য শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন। ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের  ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। হাদীসটি বর্নিত আছে, (শুআবুল ঈমান তৃতীয় খন্ড-৩৮২) এই হাদিস থেকে আমরা বলতে পারি, নামাযে অনেক মনোযোগী হতে হবে, এবং খুশু ও খুজুর শহিত নামায আদায় করতে হবে।

প্রিয় দর্শক এরপর পবিত্র শবে বরাতের আমল ও ফজিলতের এবং আমাদের করনীয় কিছু কথা বলে ভিডিও টি শেষ করবো ইনশাআল্লাহ, পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত  সর্ম্পকে হাদিসে আছে, হযরত আলী (রা:)  থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করিম  (স) বলেছেন, ১৪ ই পবিত্র শাবান দিবাগত রাত ‍যখন আসে তখন তোমরা এই রাতটি ইবাদত -বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ কেননা এই দিনে সূর্যাস্তের পরে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ায় আসমানে নেমে আসেন এবং আহব্বান করেন,কোন ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি? যাদের আমি ক্ষমা করব? কোন রিযিক প্রার্থী আছো কি? যাদের আমি রিজিক দিব? আছো কি কোন বিপদ গ্রস্থ যাদের আমি উদ্ধার করব? এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহবান করতে থাকেন। সুবহান্নাল্লাহ। হাদিস টি ইবনে মাজাহ তে বর্নিত আছে।

এই পবিত্র শবে বরাতের রাতে আমাদের করনীয় হলো, বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়বো এবং নফল নামায আদায় করবো, তাসবিহ তাহলিল করবো, কোরআন তেলোয়াত করবো।এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করবো এবং ক্ষমা প্রাথনা করবো। আল্লাহ পাক আমাদের পবিত্র শবে বরাতের রাতে সঠিক ভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন  

No comments

Powered by Blogger.